বিটরুট জুস এর উপকারিতা- বিটরুট দিয়ে রূপচর্চা

বিটরুট সালাদ এবং রান্না করে দুই ভাবেই খাওয়া যায়।বিটরুট এর অনেক উপকারিতা থাকলেও বাংলাদেশের মানুষের কাছে এটি তেমন পরিচিত নয়। বিটরুট জুস এর উপকারিতা অনেক। বিট রোড দিয়ে রূপচর্চা ও করা যায়। যেহেতু বিটরুটের অনেক উপকার রয়েছে তাই আপনার জানা উচিত বিটরুট সম্পর্কে। নিচের লেখাগুলি ভালোভাবে পড়লে আপনি বিটরুটের সকল উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
বিটরুট জুস এর উপকারিতা
বিটরুট এর মধ্যে অধিকাংশ রোগের প্রতিকার রয়েছে। সাথে রয়েছে অনেক ভিটামিন, আমিষ ,শর্করা। আপনার আমার সাপ্তাহিক খাদ্য তালিকায় বিটরুট রাখা জরুরি। সপ্তাহে অন্তত ৪-৫ দিন খেলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে।
বিটরুট জুস এর উপকারিতা জানলে আপনি অবাক হবেন। বিটরুট দিয়ে রূপচর্চা করে অনেকেই। বিটরুট এর আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। তার মধ্যে নিচে পাঁচটি উপকারিতা উল্লেখ করা হলো:
  1. উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
  2. শরীরে জ্বালাপোড়া কমায়।
  3. মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  4. লিভার সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
  5. বিটরুট বাতের ব্যথা কমায় ।

বিটরুট জুস এর উপকারিতা

বিটরুট জুস এর উপকারিতা মানব দেহের জন্য অনেক। বিশ্বের অনেক জায়গায় বিটরুটের জুস পাওয়া যায়। আপনারা চাইলে নিজের বাড়িতেও বিটরুটের জুস বানিয়ে খেতে পারেন। এতে অনেক উপকার রয়েছে। আসুন জেনে নিই বিটরুট জুস এর উপকারিতা।


যাদের হজম জনিত সমস্যা রয়েছে তারা চাইলে প্রতিদিন এক গ্লাস করে বিটরুটের জুস পান করতে পারেন। এছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে আয়রন, ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম,পটাশিয়াম,বিটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন সি। বিটরুটের রস নিয়মিত খেলে চোখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

যাদের চোখে সমস্যা রয়েছে তারা চাইলে চিকিৎসা হিসেবে নিয়মিত বিটরুটের রস পান করতে পারেন। তাছাড়াও বিটরুটের রস পান করার মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। বিটরুট এ প্রোটিনের পরিমাণ অনেক বেশি তাই নিজেকে শক্তিশালী করতে নিয়মিত বিটরুটের রস পান করতে হবে।

বিটরুট পাউডার এর উপকারিতা

বিটরুট পাউডারের উপকারিতা বিটরুট জুস এর উপকারিতা থেকে কম।বিটরুট পাউডার মূলত বিটরুট এর গুড়া, প্রথমে বিটরুট কে শুকিয়ে সেগুলো গুঁড়ো করে পিষে বিটরুট পাউডার তৈরি করা হয়। বিটরুট পাউডারের ডোজ সম্পর্কে প্রস্তুত কালে নির্দেশাবলী লিখে দেওয়া থাকে। বিটরুট পাউডার সাধারণ একটি মানুষের জন্য প্রায় 5 থেকে 20 গ্রাম।


যদিও বিটরুট পাউডার সাধারণত সব মানুষের জন্যই নিরাপদ বলে বিবেচিত হয় তবে সেটি যেন বেশি পরিমাণে সেবন না করে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। বিটরুট জুস এর উপকারিতা বেশি বিটরুট পাউডারের থেকে। বেশি পরিমাণে বিটরুট পাউডার ব্যবহার করলে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে।

যেমন গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল অস্বস্তি বা বিটরুট পাউডার এ উচ্চ অক্সালেট সামগ্রির কারণে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এজন্য বেশি পরিমাণে বিটরুট পাউডার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে।

বিটরুট পাউডার খাওয়ার নিয়ম।

বিটরুট পাউডার যেহেতু কোন ওষুধ নয় এজন্য বিটরুট পাউডার খাওয়ার নির্দিষ্ট কোন নিয়মাবলী নেই। বিটরুট পাউডার যেকোনোভাবে খাওয়া যায় যেমন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানির সাথে ২ গ্রাম বিটরুট পাউডার মিশিয়ে খেতে পারেন।

প্রতিদিন কতটুকু বিটরুট খাওয়া উচিত?

বিটরুট আমাদের শরীরের অনেক উপকার করে এজন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকার মধ্যে বিটরুট রাখলে মন্দ হয় না। এছাড়াও বিটরুট জুস এর উপকারিতা অনেক।এটি সাধারণত সুষম খাদ্যের অংশ হিসেবে একটি মাঝারি আকারের বিটরুট হতে পারে আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকার একটি অংশ।


150 গ্রাম এর মধ্যে যদি বিটরুটের ওজন হয় তাহলে সেটি একজন সাধারণ মানুষের জন্য যথেষ্ট। তবে এটি যেহেতু কোন ওষুধ না এজন্য আপনার শরীরের উপর নির্ভর করে আপনি বিটরুটের পরিমাণ কমাতে পারেন আবার বাড়াতে পারেন।

বিটরুট দিয়ে রূপচর্চা

বিটরুট একটি ঔষধ জাতীয় ফল, এজন্য অনেকেই বিটরুট দিয়ে রূপচর্চা করে থাকেন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে, ডার্ক সার্কেল দূর করতে, ত্বক মসৃণ করতে, ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করতে, মাথার খুশকি তাড়াতে, এমনকি ব্রণ দূর করতেও বিটরুট ব্যবহার হয়ে থাকে।

বিটরুট ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করতে চাইলে ২ টেবিল চামচ বিটরুটের রস এবং এর সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করুন। এরপর পুরো মুখে লাগান এবং 15 থেকে 20 মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন দেখবেন ত্বক আগের থেকে অনেক উজ্জ্বল এবং সতেজ হয়েছে।


আবার এক চা চামচ বিটরুটের রসের সঙ্গে এক চামচ কমলার রস মিশিয়ে পুরো মুখে ভালোভাবে লাগাতে পারেন এতে ত্বকের কালচে দাগ দূর হয়ে যায়।ব্রণের সমস্যা সমাধানের জন্য বিটরুটের রসের সঙ্গে সমপরিমাণ টমাটোর রস মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

বিটরুট দিয়ে চুল কালার

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের অল্প বয়সে চুল পেকে গেছে, এজন্য অনেকেই চুলে বাজার থেকে কিনে আনা চুল কালার করা তেল ব্যবহার করেন। আবার অনেকেই লজ্জায় মাথা ঢেকে রাখেন। তবে আপনি কি জানেন বিটরুট এমন একটি উপকারী ফল যেটি ব্যবহার করে আপনি চুলে চিরস্থায়ী কালো কালার আনতে পারবেন।


বাজার থেকে কিনে আনা হেয়ার কালার এ অনেক রকম রাসায়নিক কেমিক্যাল থাকে যা পরে চুলের ক্ষতি করে। বিটরুট ব্যবহার করে আপনি চিরস্থায়ী কালো চুল পেতে পারেন। বিটরুটে বিটা লাইন নামক একটি উপাদানের সন্ধান পাওয়া গেছে যেটি পানিতে খুব তাড়াতাড়ি দ্রবীভূত হয়।

আর এই উপাদানের ফলেই বিটরুট চুলের জন্য এত উপকারী।এটির ব্যবহারবিধি খুবই সহজ, প্রথমে বিটরুট পিষে এর রস বের করুন এরপর কাপড় দিয়ে ছেঁকে সেগুলো আলাদা করুন। তারপর পরিমাণ মতো ক্যারিয়ার অয়েল মিশিয়ে নিন।

তারপর দুইটা মিশিয়ে এক করে মাথায় ব্যবহার করুন।অথবা বিটরুট এর রস এবং মধু মিশিয়ে আপনি মাথায় ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়াও আমলকী মেথি ও বিটরুট এর নির্যাস করে মাথায় ব্যবহার করলে চুলের কালার কালো হবে।

বিটরুট বাংলাদেশের কোথায় পাওয়া যায়?

বিটরুট বাংলাদেশের সব অঞ্চলে পাওয়া যায় না, বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা জেলায় বিটরুট বেশি পরিমাণে চাষ হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে অনলাইনে বিটরুটের বীজ পাওয়া যায় চাইলে আপনি কিনে নিজের বাগানে অথবা বাসার ছাদে নিজেই চাষ করতে পারেন।

বিটরুট একটি উপকারী সবজি। অন্যান্য সবজির মত এটি অনেক সুস্বাদু। তবে যারা বিভিন্ন কঠিন রোগে আক্রান্ত তারা যদি খাদ্য তালিকায় বিটরুট রাখতে চান তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।

মন্তব্য: বিটরুটের অনেক উপকারিতা রয়েছে। বিটরুট জুস এর উপকারিতা অপরিসীম। এছাড়াও বিটরুট দিয়ে রূপচর্চা ও করা যায়। আমাদের উচিত অল্প হলেও বিটরুট ফল খাওয়া।

আমার এই পোস্টটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে এবং উপকারে আসে তাহলে শেয়ার করে আপনার পরিচিতদের জানিয়ে দিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url