গরমে সুস্থ থাকতে মেনে চলুন কিছু টিপস

সবাই এখন অনেক স্বাস্থ্য সচেতন। গরমে সুস্থ থাকতে মেনে চলুন কিছু টিপস।প্রচণ্ড রোদে অতিরিক্ত তাপের কারণে অনেকেই দুর্বলতা , ক্লান্তি এবং অলসতা অনুভব করতে শুরু করেছন। আমার এই কনটেন্টটি মনোযোগ সহকারে পড়লে গরমে কিভাবে সুস্থ থাকা যায় সে বিষয়ে অনেকটাই ধারণা পেয়ে যাবেন।
গরমে সুস্থ থাকতে মেনে চলুন কিছু টিপস


বাংলাদেশে বর্তমানে খুবই গরম অনুভূত হয় বেশিরভাগ অঞ্চলে ৪০° প্লাস তাপমাত্রা হয়ে থাকে। এজন্য গরমে সুস্থ থাকা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। অনেকেই এই গরমে হিট স্টক করেন। চলুন জেনে নি ই গরমের সুস্থ থাকার উপায়। 

আরো পড়ুনঃকি খাবার খেলে ওজন বাড়ে?

ভূমিকা 

কখনও কখনও, তাপ এবং আর্দ্রতার কারণে, অনেকের মাথা ঘোরা এবং বমি হতে পারে।এছাড়াও, প্রখর সূর্যালোকের কারণে, ত্বক সম্পর্কিত সমস্যা যেমন মাথাব্যথা, জলশূন্যতা, রোদে পোড়া এবং ট্যান হতে পারে।এ কারণে গ্রীষ্মে সুস্থ থাকতে কিছু বিষয় মাথায় রাখা খুবই জরুরি। আসুন কথা না বাড়িয়ে জানিয়ে দিই গরমে সুস্থ থাকতে মেনে চলুন কিছু টিপস।

গরমে সুস্থ থাকতে মেনে চলুন কিছু টিপস 

ভালো থাকতে হবে নিজেকে আর ভালো রাখতে হবে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের। তাই জানতে এবং মানতে হবে ছোট ছোট কিছু কৌশল। গরমে হিট স্ট্রোকের মতো সমস্যা থেকে নিরাপদ থাকতে যা করতে পারেন-
  • এই গরমে সুস্থ থাকতে হলে প্রচুর পরিমাণের পানি পান করুন। পানির কোন বিকল্প নেই। প্রতিদিন ঘামের সাথে প্রচুর পানি ও লবণ আমাদের শরীর থেকে বের হয়ে যায়। তাই প্রতিদিন ৫ - ৬ লিটার পানি অবশ্যই পান করুন।
  • এই গরম আবহাওয়ায় বিশেষ করে দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত চেষ্টা করুন বাসার বাইরে কাজ না রাখার। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি আমাদের ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকর। স্কিন ক্যান্সার-এর অন্যতম কারণ এই অতি বেগুনি রশ্মি।এই গরমে সুস্থ থাকতে মেনে চলুন কিছু টিপস
  • এছাড়াও অতিরিক্ত তাপমাত্রার জন্য অজ্ঞান হয়ে যাওয়া এমনকি হিট স্ট্রোকও হয়ে থাকে।যদি একান্তই বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হয়, ছাতা নিয়ে বের হবেন এবং চোখ রক্ষায় সানগ্লাস ব্যবহার করবেন। তাই ব্যবহার করুন ছাতা।
  • খুব ভিড় হয় এমন এলাকায় যাবেন না। বাচ্চা, বয়স্ক এবং ক্রনিক রোগের রোগীদের এই গরমে বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা খুব জরুরি।এই গরমে সুস্থ থাকতে মেনে চলুন কিছু টিপস
  • প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন প্রচুর সবজি ও রসালো ফল , যা শরীরের পানির ঘাটতি পূরণে সাহায্য করার পাশাপাশি বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেল ও খনিজের অভাব দূর করবে ।
  • শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয় বলে ঝোল জাতীয় খাবার থাকা খুবই দরকার । এই গরমে আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করে কাজের শক্তি যোগান দেবে। তেলে ভাজা খাবার , বাড়তি মসলাযুক্ত খাবার ও ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন।
  • প্রতিদিন মাংস গ্রহণ শরীরে জন্ম দেয় নানা রোগের। আমাদের শরীরের বেশিরভাগ রোগের অন্যতম কারণ প্রতিদিন মাংস খাওয়া। তাই প্রচন্ড গরমে সুস্থতা বজায় রাখতে নিজের এবং পরিবারের অতিরিক্ত মাংস খাওয়া পরিহার করুন।এই গরমে সুস্থ থাকতে মেনে চলুন কিছু টিপস
  • প্রচণ্ড গরমে চলার পথে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি পান করবেন না। কারণ অনেক সময় হঠাৎ ঠান্ডা পানি খেলে গলা ব্যথাসহ বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে পারে। বাইরে থেকে ঘেমে ঘরে ফিরেও সঙ্গে সঙ্গে হিমশীতল পানি খাওয়া ঠিক নয়।
  • গরমে কাহিল হয়ে রাস্তার পাশের জুস বা শরবত খাবেন না। অনেক সময় এগুলোর মাধ্যমে শরীরে ডায়রিয়া, ফুড পয়জনিং, বমি এবং জন্ডিসের মতো রোগ হওয়ার আশংকা থাকে। গরমে নিয়মিত পান করুন লেবুর শরবত কিংবা বেলের শরবত। সম্ভব হলে ডাবের পানি পান করুন। লেবুতে আছে ভিটামিন সি ।এই গরমে সুস্থ থাকতে মেনে চলুন কিছু টিপস
  • বেলে আছে ভিটামিন, মিনারেল, শর্করা। ডাবের পানিতে আছে আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রণ ইত্যাদি। এ জাতীয় পানীয় শরীরকে করবে সতেজ ও ঠান্ডা এবং শরীরে ভিটামিন, আয়োডিন-এর অভাব দূর করে শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ।এই গরমে সুস্থ থাকতে মেনে চলুন কিছু টিপস
  • গরমের তীব্রতা বাড়ায় হিট স্ট্রোক নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এই গরমে কারোর তীব্র মাথা ব্যথা, প্রচণ্ড তৃষ্ণা, দ্রুত হৃৎস্পন্দন, শ্বাসকষ্ট এবং দ্রুত ও ভারী শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া, বমি বমি ভাব, পেশীতে ব্যথা, দুর্বলতা ও অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
  • চা, কফিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে নিকোটিন। যা শরীরকে করে তোলে শুষ্ক। যেহেতু গ্রীষ্মকালে আমরা প্রচুর ঘামি, সেহেতু শরীরের থেকে বেরিয়ে যায় প্রচুর পানি। তাই চা, কফি পান যথা সম্ভব কমিয়ে দিন। আর হলে গরমের সময় পান করা থেকে বিরত থাকুন।এই গরমে সুস্থ থাকতে মেনে চলুন কিছু টিপস
  • প্রতিদিন সকালে হালকা ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম দেহ ও মনের উৎকর্ষতা সাধন করে। দেহ ও মনকে সতেজ রাখে, কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে, শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে, হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ।
  • এই গরমে পরিধান করুন সুতি জাতীয় কাপড়ের পোশাক এবং পোশাকটি ঢিলেঢালা পরিধান করার চেষ্টা করুন, কেননা আঁটসাঁট বা গাঁয়ের সাথে লেগে থাকা পোশাকে গরম বেশি অনুভূত হয়।
  • গাঢ় রঙ সূর্যের তাপ বেশি শোষণ করে তাই গাঢ় রঙের পোশাকে গরম বেশি লাগে এবং বেশি ঘাম হয়। ফলে শরীর থেকে বেশি পানি বের হয়ে যায়। তাই এই প্রচন্ড গরমে সুস্থতা বজায় রাখতে ব্যবহার করুন হালকা রঙের পোশাক।
  • গরমে ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে অতিরিক্ত লবণপানি বেরিয়ে যায়। তাই শরীরে লবণপানির ঘাতটি মেটাতে খাবার স্যালাইন খাওয়া যেতে পারে। খাবার স্যালাইন শরীরের পানি স্বল্পতা দূর করে।এই গরমে সুস্থ থাকতে মেনে চলুন কিছু টিপস
  • প্রচণ্ড গরমে বাইরে বের হলে অনেকেরই চোখ জ্বালা করে। এ পরিস্থিতিতে চোখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিলে আরাম লাগবে। চোখ ভালো থাকবে।
  • গরমে শরীর ঘামের কারণে দুর্গন্ধ হয়। এ সময় পরিচ্ছন্নতার জন্য গরমকালে সাবান দিয়ে গোসল করা ভালো। যদি সম্ভব হয় তবে দুবার গোসল করা যেতে পারে।এই গরমে সুস্থ থাকতে মেনে চলুন কিছু টিপস
  • অতিরিক্ত গরমে অনেকেরই অ্যাজমার সমস্যা তীব্র হয়। এ অবস্থায় অ্যাজমা রোগীরা যাতে গরমের অস্বস্তিকর পরিবেশের মুখোমুখি না হন, সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। চিকিৎসকের দেয়া চিকিৎসা নিয়মিতভাবে গ্রহণ করতে হবে; মেনে চলতে হবে উপদেশগুলো।

আরো পড়ুনঃবিটরুট জুস এর উপকারিতা

শেষকথা

সামান্য কিছু নিয়ম মেনে চললে নিজে যেমন সুস্থ থাকা যায় ঠিক তেমনি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও সুস্থ্য রাখা সম্ভব। তাই এই প্রচন্ড গরমে সুস্থতা বজায় রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলুন। স্বাস্থ্যসম্মত, সুস্থ, সুন্দর ও সুখী জীবন আমাদের সকলের একান্ত কাম্য। নিজে ভালো থাকুন এবং নিজের পরিবারকে ভালো রাখুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url