কমলা ফলের উপকারিতা-রাতে কমলা খেলে কি হয়?

কমলা একটি মৌসুমী ফল। ঠান্ডার সময় কমলা বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। কমলা ফলের উপকারিতা অনেক  রয়েছে। আজকে আমরা জানবো রাতে কমলা খেলে কি হয়? পাশাপাশি কমলার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানব। এজন্য পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।




কমলা মৌসুমী ফল হলেও বর্তমানে প্রায় সারা বছরই কমলা পাওয়া যায়। কমলার অনেক উপকারিতা সম্পর্কে চিকিৎসকেরা বলে থাকেন।কমলাই প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং আমাদের শরীরের জন্য উপকারী অনেক কিছু রয়েছে। আমাদের প্রত্যেকের উচিত কমলা ফল খাওয়া।

কমলা খাওয়ার সঠিক সময় কখন?

এক কথায় যদি বলতে যাই তাহলে বলতে হয় কমলা খাওয়ার সঠিক সময় দিনের বেলা। আরো পরিষ্কারভাবে বলতে গেলে সকাল বেলা। কমলা খালি পেটে খেলে কমলা ফলের উপকারিতা বেশি পাওয়া যায়।

এছাড়াও বিশ্রামের পরে, সারারাত উপোস করার পরে প্রধান খাবারের মধ্যে একটি জলখাবার হিসাবে এবং সকালের নাস্তায় কমলা খাওয়ার সঠিক সময় বলে চিকিৎসকেরা বলে থাকেন। রাতে কমলা খেলে কি হয় এমন প্রশ্ন অনেকেই করে থাকেন। রাতে খাওয়া-দাওয়ার পর যেহেতু সবাই ঘুমাইতে যায় এজন্য রাতে কমলা খাওয়া সঠিক সময় হতে পারে না।

আরো পড়ুনঃতেঁতুল কি কিডনির জন্য ক্ষতিকর?

কমলার উপকারিতা

কমলা ফলের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবেনা। একটা মানুষ কে পরিপূর্ণ সুস্থ থাকার জন্য কমলা খাওয়ায় যথেষ্ট। কমলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। নিচে কমলা ফলের উপকারিতা ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হলো।

  1. প্রথমেই যেটি বলতে হয় সেটি হল ভিটামিন সি। কমলা ফলে রয়েছে প্রচুর প্রচুর ভিটামিন সি। শরীরে ভিটামিন সি এর ঘাটতি দেখা দিলে কমলা ফল খাবার বিকল্প নেই।
  2. ব্রেস্ট ক্যান্সার ও স্কিন ক্যান্সার এর ঝুঁকি কমায় কমলা ফলে থাকা ভিটামিন।
  3. কমলা ফলে রয়েছে ভিটামিন এ। যার কারণে এটি চোখের সমস্যা দূর করে এবং দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে।
  4. কমলা ফলের উপকারিতা আরেকটি রয়েছে সেটি হল:- প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় কমলা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং ত্বকে তারুণ্য ভাব ধরে রাখতে সাহায্য করে।
  5. টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে কমলাই রয়েছে আঁশ জাতীয় উপাদান যা ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  6. কমলা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  7. কমলাই রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন বি-6 যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  8. মস্তিষ্ক শক্তিশালী করতে কমলা ফল অনেক কার্যকরী।


দিনে কয়টি কমলা খাওয়া উচিত?

কমলা একটি সুস্বাদু ফল। কমলা ফলের উপকারিতা ও অনেক। আমাদের প্রত্যেকের ই এই ফল খাওয়া উচিত। তবে সকলের জন্য কমলা ফল বেশি খাওয়া উচিত না। যেসব ব্যক্তির রক্তে পটাশিয়াম এর মাত্রা অনেক বেশি তাদের কমলা কম খাওয়া উচিত এবং খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

যদিও কমলায় পটাশিয়ামের মাত্রা কম থাকে তারপরেও যাদের শরীরে ইতিমধ্যে এই সমস্যা রয়েছে তাদের বেশি পরিমাণে কমলা খাওয়া মোটেও উচিত না। তবে সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেও দিনে এক থেকে দুইটার বেশি কমলা খাওয়া উচিত হবে না।

কমলার অপকারিতা

কমলা ফলের উপকারিতা যেমন অনেক রয়েছে তেমনি এর কিছু অপকারিতা ও লক্ষ্য করা যায়। আসুন আমরা কমলা ফলের কিছু অপকারিতা সম্পর্কে জানি। প্রতিদিন একটি সুস্থ মানুষের জন্য এক থেকে দুইটি কমলায় যথেষ্ট।

কিন্তু কেউ যদি প্রতিদিন চার থেকে পাঁচটা কমলা খাই এবং সেটা প্রত্যেকদিন চলতে থাকে তাহলে তার শরীরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবারের সংখ্যা বেড়ে যাবে। এর ফলে পেটের সমস্যা, পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া, পেট ফুলে যাওয়া সহ বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে।


যেহেতু কমলা ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে তাই বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি গ্রহণ করার কারণে বুক জ্বালা, অনিদ্রা এমনকি হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। এজন্য কমলা ফলের উপকারিতা এর পাশাপাশি অপকারিতা সম্পর্কেও অবগত থাকা উচিত এবং অধিক পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।

আরো পড়ুনঃচালতার চাটনি উপাদান




রাতে কমলা খেলে কি হয়?

কমলা ফলের উপকারিতা যেমন রয়েছে তেমনি কমলা খাওয়ার বিশেষ কিছু সময় রয়েছে। যে সময়ে কমলা খেলে উপকারিতা বেশি পাওয়া যায়। দুপুরের রোদে বসে কমলা না খেয়ে সকালে কমলা খাওয়া উচিত। এটি শুধু কমলা ফলের ক্ষেত্রেই না সকল ফলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

কমলা ফল মূলত খালি পেটে খাওয়া ভালো। সকালের নাস্তায় কমলা খাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ সময়। এছাড়াও সারারাত না খেয়ে থাকলে যখন কিছু খেতে চাইবেন তখন খেতে পারেন। অন্যান্য খাবারের সঙ্গে জলখাবার হিসাবে কমলা খাওয়া যেতে পারে। যেহেতু কমলা ফলের উপকারিতা অনেক এজন্য আমাদের প্রত্যেকের কমবেশি কমলা খাওয়া উচিত।

শেষ কথা

কমলা ফলের উপকারিতা সম্পর্কে আমরা জানলাম। আমরা আরো জানলাম রাতে কমলা খেলে কি হয়। আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াইতে এবং ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করতে কমলা খাওয়ার বিকল্প নেই। তবে সেটি যেন বেশি পরিমাণে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

আমার এই পোস্টটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন এবং ভালো লাগে তাহলে শেয়ার করে আপনার প্রিয়জনদের জানিয়ে দিন। নিজে সুস্থ থাকি এবং অপরকে সুস্থ থাকার পরামর্শ দেই।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url