টিয়ারসেল গ্যাস কি - টিয়ার গ্যাস থেকে বাঁচার উপায়
কোন গোলযোগ দমনে টিয়ারসেল গ্যাস এর ব্যবহার রয়েছে। অনেকের মনে প্রশ্ন টিয়ারসেল গ্যাস কি?টিয়ারসেল গ্যাস থেকে বাচার উপায় কি কি? তাদের জন্য আমার এই পোস্ট। আমার এই পোস্টটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন টিয়ারসেল গ্যাস কি, এছাড়াও এ সম্পর্কে আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপাত্ত দিয়ে আলোচনা করব। এইজন্য মনোযোগ সহকারে পড়বেন
টিয়ারসেল গ্যাস মূলত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাধারণ মানুষের উপর প্রয়োগ করে থাকে। এটি মরণঘাতি না হলেও যাদের শ্বাসকষ্টের রোগ রয়েছে তাদের জন্য অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।
ভূমিকা
টিয়ারসেল গ্যাস কি এ সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে এর ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। সাধারণত টিয়ারসেল গ্যাস মানুষের চোখ মুখে বেশি আক্রান্ত হয়। এজন্য খুব সাবধানে চলাফেরা করতে হবে। যদি মাক্স ব্যবহার করা যায় তাহলে অনেকাংশেই টিয়ারসেল গ্যাস থেকে বাঁচা যায়। চলুন এ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
টিয়ারসেল গ্যাস কি
টিয়ারসেল গ্যাস কি এই প্রশ্নের উত্তর হল, টিয়ারসেল গ্যাস একটি রাসায়নিক পদার্থ যা মানুষের চোখে ব্যথা, অশ্রুপাত, শ্বাসকষ্ট এবং চামড়ায় জ্বালা সৃষ্টি করে। এটি সাধারণত বিক্ষোভ, দাঙ্গা বা জনসমাবেশ নিয়ন্ত্রণের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দ্বারা ব্যবহার করা হয়।টিয়ারসেল গ্যাস সরাসরি প্রাণঘাতী নয়, তবে এটি শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা, চোখের ক্ষতি এবং অন্যান্য গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে দীর্ঘ সময় ধরে সংস্পর্শে থাকলে। আশা করি টিয়ারসেল গ্যাস কি এই সম্পর্কে আপনাদের আর কোন দ্বিধা নেই।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় সফেদা খাওয়ার উপকারিতা
টিয়ার গ্যাসের উপাদান কি?
টিয়ার গ্যাসের প্রধান উপাদান হলো বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক যৌগ, যা চোখ এবং শ্বাসযন্ত্রে তীব্র জ্বালা এবং অশ্রুপাত সৃষ্টি করে। সাধারণত টিয়ার গ্যাসের মধ্যে নিম্নলিখিত উপাদানগুলো পাওয়া যায়:- ক্লোরোঅ্যাসিটোফেনোন (CN): এটি টিয়ার গ্যাসের এক ধরনের রাসায়নিক যা চোখের মধ্যে তীব্র জ্বালা এবং অশ্রুপাত সৃষ্টি করে। এটি সাধারণত কম শক্তিশালী এবং কম ক্ষতিকর বলে মনে করা হয়।
- ক্লোরোবেনজাইলিডেনম্যালোনোনাইট্রাইল (CS): এটি সবচেয়ে সাধারণ এবং শক্তিশালী উপাদান, যা চোখের জ্বালা, শ্বাসকষ্ট, এবং ত্বকে জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে। এটি সাধারণত বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত হয়।
- ডিবেনজক্সাজেপিন (CR): এটি আরও শক্তিশালী এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। এটি কম ব্যবহৃত হয় তবে বেশি ক্ষতিকর হতে পারে।
- ফেনাসিল (CNB): এটি একটি কম প্রচলিত উপাদান যা টিয়ার গ্যাসে ব্যবহৃত হতে পারে, তবে এটি অন্যান্য উপাদানগুলির মতো তীব্র নয়।
আরো পড়ুনঃ বিটরুট দিয়ে রূপচর্চা
চোখের সমস্যা:
ত্বকের প্রতিক্রিয়া:
টিয়ার গ্যাস থেকে বাঁচার উপায়
টিয়ারসেল গ্যাস কি? এবং এটি থেকে বাঁচার উপায় সম্পর্কে অনেকেরই জানার আগ্রহ রয়েছে। এবং এটি জানা অত্যন্ত জরুরী।টিয়ারসেল গ্যাসকে মূলত রাসায়নিক অস্ত্র বলা হয়ে থাকে। তবে এটি প্রাণঘাতী নয়। টিয়ারসেল এর মাধ্যমে কোন ব্যক্তির মৃত্য ঘটে না তবে তাৎক্ষণিক অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। আসুন জেনে নেই টিয়ারসেল গ্যাস থেকে বাঁচার উপায়।- প্রথমেই যেটি বলা যায় সেটা হল যেখানে টিয়ারসেল গ্যাসের আচ্ছাদিত অংশ রয়েছে সেখান থেকে অন্য জায়গায় সরে আসা।
- বাতাসের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে থাকা এতে করে বাতাসের কারণে টিয়ারসেল গ্যাস পিছনে চলে যাবে এতে করে চোখ মুখ গ্যাস থেকে রক্ষা পাবে। ঠান্ডা পানি দিয়ে চোখমুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে তবে একটি বিষয় ভালোভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে যে চোখ মুখে দেওয়া পানি যেন কোনভাবেই কাপড়ে না পড়ে। তাই এ বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে।
- টিয়ারসেল গ্যাসে আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে শরীর ও পোশাক ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। কোনরকম গরম পানি ব্যবহার করা যাবে না।
- যাদের শ্বাসকষ্ট সমস্যা রয়েছে তাদের টিয়ারসেল গ্যাস থেকে দূরে থাকতে হবে সবসময়ই।
আরো পড়ুনঃ বিটরুট জুস এর উপকারিতা
টিয়ারশেল মারলে কি হয়
টিয়ারসেল গ্যাস কি এই সম্পর্কে আগেই জেনেছেন এখন আমরা টিয়ারসেল মারলে কি ক্ষতি হয় সে সম্পর্কে জানব। টিয়ারশেল মারলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে, যেগুলো সাধারণত অস্বস্তিকর এবং কখনও কখনও স্বাস্থ্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। টিয়ারশেল গ্যাস বা টিয়ার গ্যাসের প্রভাব শরীরের সংস্পর্শে আসার সাথে সাথে তাৎক্ষণিকভাবে অনুভূত হয়। প্রধান প্রভাবগুলো হলো:চোখের সমস্যা:
- তীব্র জ্বালা, চুলকানি এবং ব্যথা।
- চোখ থেকে প্রচুর অশ্রুপাত।
- চোখে অস্থায়ী অন্ধত্ব বা ঝাপসা দেখা।
- চোখের সাদা অংশে লালভাব এবং প্রদাহ।
- শ্বাসকষ্ট বা শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।
- নাক দিয়ে পানি পড়া এবং নাসারন্ধ্র জ্বালাপোড়া।
- গলা জ্বালা এবং শুষ্কতা।
- কাশি, শ্বাস ফেলার সময় সাঁই-সাঁই আওয়াজ, এবং ফুসফুসে জ্বালা।
আরো পড়ুনঃ বৃষ্টির পানির অপকারিতা
- ত্বকে জ্বালা এবং লালভাব।
- সংস্পর্শে আসা অংশে জ্বালাপোড়া, চুলকানি, এবং ফোসকা পড়া।
- দীর্ঘ সময় ধরে সংস্পর্শে থাকলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে।
- মাথা ঘোরা, বমি ভাব, এবং বমি।
- উচ্চ মাত্রায় সংস্পর্শে আসলে, কিছু লোকের ক্ষেত্রে প্যানিক অ্যাটাক হতে পারে।
লেখকের বক্তব্য
টিয়ারসেল গ্যাসের স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। এলার্জি শরীর জ্বালা পোড়া সহ ফুসফুসের ও মারাত্মক ক্ষতি হয়ে থাকে। উত্তপ্ত টিয়ারসেল যদি সরাসরি আঘাত করে তাহলে শরীর দগ্ধ ও আহত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক। তাই আমাদের উচিত টিয়ারসেল গ্যাস ব্যবহৃত স্থানে না থাকা এবং কোন জায়গায় টিয়ারসেল গ্যাসের আক্রমণ হলে তাড়াতাড়ি ওই স্থান ত্যাগ করা।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url