স্পাউস ভিসার সুবিধা ও অসুবিধা - বাংলাদেশ থেকে কিভাবে স্পাউস ভিসা পাবেন
আমরা
বাঙালিরা সবসময়ই
চাই দেশ থেকে বিদেশে যে নিজের একটি সুন্দর জীবন যাপন করতে। আপনারা অনেকেই স্পাউস
ভিসা পেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এজন্য আপনাদের অনেকের মনে স্পাউস ভিসার সুবিধা ও
অসুবিধা কি কি এবং বাংলাদেশ থেকে কিভাবে স্পাউস ভিসা পাবেন এই সম্পর্কে
বিস্তারিত জানতে
চান।
আসলে স্পাউস ভিসা মূলত পড়াশোনা, ভ্রমণ কিংবা আত্মীয় স্বজনদের দেখা-সাক্ষাৎ করার
জন্যই বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে এগুলা ছাড়াও আরো
অনেক ভাবে
স্পাউস ভিসা ব্যবহার করা যায়।
ভুমিকা
আমরা মানুষ একটি গন্ডির ভিতর থাকতে পছন্দ করি না। আমাদের মন চাই পৃথিবীর সকল দেশে
ঘুরে বেড়াতে । একটি আন্তর্জাতিক দেশে ভ্রমণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি
প্রয়োজন
। সেই নথি টি হলো ভিসা । অন্য দেশের নিরাপত্তা ও নীতিমালার উপর ভিত্তি করে ভিসা
প্রদান করা হয় ।
ভিসারও কয়েকটি প্রকার রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো স্পাউস ভিস৷ । আপনি যদি
জানতে চান স্পাউস ভিসার সুবিধা ও অসুবিধা এবং বাংলাদেশ থেকে কিভাবে স্পাউস ভিসা
পাবেন, তাহলে এই আর্টিকেলটি সম্পন্ন মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো।
ভিসা কেন প্রয়োজন
স্পাউস ভিসার সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে আমি
আপনাকে অবশ্যই
জানবো তবে তার আগে আপনার জানা প্রয়োজন ভিসা কেন প্রয়োজন সে সম্পর্কে।ভিসা
শব্দটি ছোট হলেও এর কাজ এবং প্রক্রিয়া অনেক জটিল। ভিসা শব্দের অর্থ হলো
অনুমতি।
একটি দেশ বা রাষ্ট্র থেকে অপর একটি দেশে অফিসের অনুমতির দেওয়াই হল ভিসার কাজ।
ভিসা প্রয়োজন কারণ একটি দেশের জাতীয় নিরাপত্তা অপরাধী সনাক্তকরণ ইত্যাদি এই
ভিসার
নির্ভরশীল।
কোন অপরাধী যেন এক দেশ থেকে অন্য দেশে স্থানান্তর না হতে পারে তার জন্য এই ভিসা
প্রয়োজন।
আরো পড়ুনঃ
ব্যালন ডি অরের পর্দার পেছনের গল্প
আইনী সুরক্ষার নিয়মাবলী অনুযায়ী প্রতিটা দেশের একটি নির্দিষ্ট আইন থাকে যে
আইনের ভিত্তিতে ভিসা প্রদান করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে এটি ভ্রমণ বা শিক্ষার কাজে
ব্যবহার করা হয়। এর জন্য এটি প্রয়োজন কখন কোন কাজে এটি ব্যবহার করা হয় এটি
জানার জন্য মূলত ভিসা প্রদান করা হয়।
আপনি যদি স্পাউস ভিসার সুবিধা ও অসুবিধা এবং বাংলাদেশ থেকে কিভাবে স্পাউস ভিসা
পাবেন এই সম্পর্কে জানতে এই
আর্টিকেলটি প্রবেশ করেন, তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন।
স্পাউস ভিসা কি এবং কেন
স্পাউস ভিসার সুবিধা ও অসুবিধা জানার আগে আমি আপনাকে জানাবো স্পাউস ভিসা কি এবং
এটা কেন প্রয়োজন। স্পাউস ভিসা এমন এক ধরনের ভিসা যা শুধুমাত্র
বাংলাদেশের আইনে
বৈধ বিবাহ সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রদান করা হয়।
যদি স্বামী বা স্ত্রী যেকোন একজন বিদেশ অবস্থান করে তবে তার জীবন সঙ্গীর একসাথে
স্থায়ী বসবাসের জন্য স্পাউস ভিসা প্রদান করা হয়। আইনি সুরক্ষার জন্য স্পাউস
ভিসা প্রদান করা হয়। এই ভিসাতে শিক্ষা সেবা, স্বাস্থ্য সেবা, ট্রাফিক সেবা
ইত্যাদি সহ আরো অনেক সেবা ভোগ করতে পারে।
আরো পড়ুনঃ
অতিরিক্ত ঘাম হলে কি করবেন
স্পাউস ভিসার মাধ্যমে স্বামী ও স্ত্রী স্থানান্তরিত দেশে স্থায়ী বাসিন্দার
মর্যাদা পেয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করার সুযোগ পায়। আপনি এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ
মনোযোগ দিয়ে পড়লে স্পাউস ভিসার সুবিধা ও অসুবিধা এবং বাংলাদেশ থেকে কিভাবে
স্পাউস ভিসা পাবেন সে সম্পর্কিত সকল তথ্য বিস্তারিত জানতে পারবেন।
স্পাউস ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা যাচাই
স্পাউস ভিসার সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে তথ্য আমি আপনাকে একটু পরে জানাবো, তবে
এখন স্পাউস ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে জানাবো। স্পাউস ভিসা
পাওয়ার জন্য কিছু
যোগ্যতার প্রয়োজন রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বৈধ বিবাহ সম্পর্ক। জীবন সঙ্গির
এর সাথে বিবাহের প্রমাণ পত্র লাগবে।
অনেক দেশে সহবাস করার প্রমাণও দেওয়া লাগে । যা ডাক্তার থেকে সার্টিফাইড হওয়া
প্রয়োজন। যোগ্যতার মধ্যে আরেকটি উল্লেখযোগ্য হল আর্থিক সক্ষমতা। আমি অথবা স্ত্রী
যে কোন একজনকে দেখাতে হয় তারা তাদের সঙ্গীকে
আর্থিকভাবে সাহায্য করতে সক্ষম।
যাতে ভিসা প্রাপ্ত ব্যক্তি দেশের উপর বোঝা না হয়। কিছু কিছু দেশের জন্য দুজনকেই
সেই দেশের ভাষার উপর দক্ষতা অর্জন করতে হয়। তবে কিছু দেশের ক্ষেত্রে এটার
প্রয়োজন পড়ে না। উদাহরণ স্বরূপ যুক্ত রাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র ইংল্যান্ড ইত্যাদি
দেশে তাদের ভাষাগত দক্ষতা অর্জন করার প্রয়োজন হয়।
নাহলে ভিসার জন্য সে বাতিল বলে গণ্য হয়।আরেকটি যোগ্যতা হলো শারীরিক ও মানসিকভাবে
সুস্থ থাকা । ভিসা প্রদানের পূর্বে নির্দিষ্ট দেশের এম্বাসিতে গিয়ে স্বাস্থ্য
পরীক্ষা করা লাগে। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় পাশ করলে তারপরে সেই ব্যক্তি ভিসা পাওয়ার
জন্য যোগ্যতা অর্জন করেন।
আর একটু পরে আমি আপনাকে জানাবো স্পাউস ভিসার সুবিধা ও অসুবিধা এবং বাংলাদেশ থেকে
কিভাবে স্পাউস ভিসা পাবেন সে সম্পর্কিত সকল
বিস্তারিত তথ্য।
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টে বা কাগজপত্র
স্পাউস ভিসার সুবিধা ও অসুবিধা জানার আগে আপনার জন্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো,
স্পাউস ভিসা পাইতে কি কি কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট লাগবে তা জানা। চলুন এখন আমি
আপনাকে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র সম্পর্কে জানাই।
- বিবাহের সার্টিফিকেটঃ আবেদনকারীর সাথে বিদেশ অবস্থানরত ব্যক্তির বিবাহের বৈধ সার্টিফিকেট। অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশ বিবাহের ছবি ও ভিডিও চেয়ে থাকে।
- আয়ের প্রমাণঃ আবেদনকারীর ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা কোন আয়ের প্রমাণ অথবা ট্যাক্স এর নথিপত্র জমা দেওয়া লাগে। আবেদনকারী যদি চাকরিরত অবস্থায় থাকে তাহলে তাকে চাকরির চুক্তিপত্র জমা দিতে হবে এবং তার বেতন উল্লেখ করতে হবে।
- পরিচয়পত্রঃ আবেদনকারীর নিজের জাতীয় পরিচয় পত্র এবং পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি সহ আবেদনকারী পাসপোর্ট জমা দিতে হবে যা ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুনঃ
প্রতিবন্ধীদের ক্রিকেট খেলার নিয়ম কানুন
- ছবিঃ আবেদনকারীর আবেদন করার সময় বর্তমান ছবি তুলে জমা দিতে হবে। যা চাকরিরত অবস্থায় থাকলে সেখানকার প্রধানকে দিয়ে সত্যায়িত করতে হবে।
- মেডিকেল রিপোর্টঃ আবেদনকারীকে অবশ্যই শারীরিকভাবে ও মানসিকভাবে সুস্থ হতে হবে। এর জন্য মেডিকেল থেকে সার্টিফাইড ডাক্তারের দ্বারা চেকআপ করে সেই মেডিকেল রিপোর্টটি জমা দিতে হবে।
- ভাষার দক্ষতার প্রমাণঃ আমি আপনাকে জানিয়েছি কিছু কিছু দেশে দেওয়ার জন্য ভাষার দক্ষতার প্রয়োজন হয়। এর জন্যই ভাষা দক্ষতার প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়।
স্পাউস ভিসা পাওয়ার সাধারণ পদক্ষেপ
বাংলাদেশ থেকে স্পাউস ভিসা পাওয়ার জন্য কয়েকটি পদক্ষেপ রয়েছে তার মধ্যে
প্রথম পদক্ষেপ হলো আবেদন। একজন ব্যক্তিকে আবেদন করতে হয় উল্লেখিত সকল ডকুমেন্ট
দিয়ে। ভিসা ফি প্রদান
করতে হয় যা
আবেদনের সময় জমা দেওয়া লাগে।
প্রতিটা দূতাবাসে স্বাস্থ্য চিকিৎসার পাশাপাশি বায়োমেট্রিক্স পরীক্ষা করা হয়।
যেমন আঙুলের ছাপ,চোখের আইরিশ, গলার স্বর ইত্যাদি। এই সকল পদক্ষেপ শেষে দূতাবাস
সিদ্ধান্ত নেই বা ফলাফল জানায় যে আবেদনকারী ব্যক্তি এই ভিসার জন্য গ্রহণযোগ্য
কি না!
যদি সে ব্যক্তি গ্রহণযোগ্য হয় তবে তাকে ভেজা প্রদান করা হয়। আমি আপনাকে
জানালাম স্পাউস ভিসা পাওয়ার সাধারণ পদক্ষেপ একটু পরেই আমি আপনাকে জানাবো স্পাউস
ভিসার সুবিধা ও অসুবিধা এবং বাংলাদেশ থেকে কিভাবে স্পাউস ভিসা পাবেন সে
সম্পর্কে ।
স্পাউস ভিসার সুবিধা ও অসুবিধা
আপনি অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছেন স্পাউস ভিসার সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে জানার
জন্য । আমি আপনাকে আর দেরি করাবো না চলুন নিচে এ বিষয়ে
আলোচনা করি। আমরা
প্রথমে জানবো স্পাউস ভিসার সুবিধা সম্পর্কেঃ
স্পাউস ভিসার প্রধান ও অন্যতম সুবিধা হলো পরিবারের পূনর্মিলন। বিদেশে কর্মরত
থাকলে একজন ব্যক্তি অনেক দিন তার পরিবারের সাথে সাক্ষাত করতে পারে না। এই
স্পাউস ভিসা সেই সুযোগটি করে দেয়। অনেক ক্ষেত্রেই সহজ ব্যথার মাধ্যমে স্থায়ী
বসবাস ও স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার সুযোগ থাকে।
অনেক দেশে স্পাউস ভিসায় যাওয়া ব্যক্তি কে কাজের অনুমতি প্রদান করা হয়।
স্বাস্থ্য সেবা ও অন্যান্য সুবিধা প্রদান করা হয়। মিসকল ভিসা নিয়ে যারা
বিদেশে বসবাস করতে যান তাদের অনেকেই সেই দেশে শিক্ষা গ্রহণের অনুমতি পান।
এবার আমি আপনাকে স্পাউস ভিসার কয়েকটি অসুবিধা সম্পর্কে জানাবো।
স্পাউস ভিসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অসুবিধা হল অনেক জটিল আবেদন প্রক্রিয়া যাতে
অনেক সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পরে। ভাষার দক্ষতা প্রয়োজন হয় এর জন্যই অনেক
মানুষ এটি আবেদন করতে চায় না।
আরো পড়ুনঃ
স্মৃতির উপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো টেকনিক
সামান্য কোন প্রক্রিয়া বা তথ্য ভুল থাকলে ভিসা প্রদান করা হয় না। এছাড়াও আরো
অনেক কথা সত্য বলে থাকার কারণে এই ভিসা পাওয়া মানুষের কাছে অত্যন্ত কঠিন বলে
মনে হয়। তবে এখন আমি আপনাকে জানাবো বাংলাদেশ থেকে কিভাবে স্পাউস ভিসা পাবেন।
বাংলাদেশ থেকে কিভাবে স্পাউস ভিসা পাবেন
উপরে আমি আপনাকে
জানিয়েছি স্পাউস ভিসার সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত আশা করি আপনি সেটা বুঝতেও
পেরেছেন। এখন আমি আপনাকে জানাবো বাংলাদেশ থেকে কিভাবে স্পাউজ ভিসা পাবেন সে
সম্পর্কে।
বাংলাদেশ থেকে স্পাউস ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস
খেয়াল রাখতে হবে। সর্বপ্রথম আপনাকে দেশের বৈধ নাগরিক হতে হবে এবং বৈধভাবে
বিবাহিত হতে হবে। আবেদনকারীর অবশ্যই পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং আবেদনকারীকে
দূতাবাস আবেদন করে তার নির্দিষ্ট ফর্ম নিয়ে তাতে উপরে উল্লেখিত প্রয়োজনীয়
ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ
দুম্বার মাংসের গুনাগুণ ও উপকারিতা
আপনাকে ভিসা পাওয়ার জন্য ভাষা গত দক্ষতা অর্জন করতে হবে। আবেদনকারীর ব্যাংক
স্টেটমেন্ট বেতন স্লিপ অথবা ট্যাক্সের নথিপত্রের হোল্ডিং নাম্বার সহ জমা দিতে
হবে । ভিসা আবেদনের জন্য আপনার কোন তথ্য ভুল হওয়া যাবে না।
কোন তথ্য ভুল বা ত্রুটি থাকলে আপনার ভিতরে প্রত্যখ্যান করা হবে। আবেদন কারীকে
অবশ্যই স্বাস্থ্য পরীক্ষা দিতে হবে এবং তার মেডিকেল রিপোর্ট দূতাবাসে জমা দিতে
হবে। উপরের উল্লেখিত
নিয়মাবলী মানলে আপনার ভিসা পেতে সুবিধা হবে।
শেষ কথা
আশা করি এই
আর্টিকেলটিতে আমি আপনাকে স্পাউস ভিসার সুবিধা ও অসুবিধা এবং বাংলাদেশ থেকে কিভাবে স্পাউস
ভিসা পাবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে পেরেছি। আপনি উপরে বর্ণিত বিষয় সমূহ
মাথায় রেখে স্পাউস ভিসা আবেদন করতে পারেন।
আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে এবং উপকারে আসে তাহলে আপনার
বন্ধুদের শেয়ার করে জানিয়ে দিন। এবং এরকম অজানা বিষয় সম্পর্কে জানতে নিয়মিত
ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url