রাসেল ভাইপার কি ডিম পাড়ে নাকি বাচ্চা দেয়?
ভাইপার একটি বিষাক্ত সাপ। অনেকেই আপনারা জানতে চান, রাসেল ভাইপার কি ডিম পাড়ে
নাকি বাচ্চা দেয়? এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে আপনাকে মনোযোগ সহকারে আমার এই
পোস্টটি পড়তে হবে।
রাসেল ভাইপার অনেক বিষাক্ত একটি সাপ এটি আমরা সবাই জানি। তবে রাসেল ভাইপার সাপ
কামড়ালে সেটি থেকে প্রতিকারের উপায় গুলো আমাদের জানা উচিত।
ভূমিকা
রাসেল ভাইপার সাপ বিষাক্ত তবে সকল সাপ কিন্তু রাসেল ভাইপার না । আমরা অনেকেই
রাসেল ভাইপার সাপ চিনতে পারিনা। এজন্য সাধারণ অনেক সাপকে রাসেল ভাইপার মনে করি
এবং ভীষণ ভয় পাই।
আবার আপনারা অনেকেই জানতে চান রাসেল ভাইপার কি ডিম পাড়ে নাকি বাচ্চা দেয় সেই
সম্পর্কে। তবে চলুন বেশি দেরি না করে আপনাদেরকে জানিয়ে দেই, রাসেল ভাইপার কি ডিম
পারে নাকি বাচ্চা দেয়? এছাড়াও জানাবো রাসেল ভাইপার সম্পর্কে বিস্তারিত।
রাসেল ভাইপারের নামকরণ ও পরিচিতি
চন্দ্রবোড়া বা রাসেল ভাইপার ভারতীয় উপমহাদেশের মারাত্নক বিষধর একটি সাপ এবং এই
উপমহাদেশের যে চারটি সবচেয়ে বেশি বিষধর সাপ রয়েছে তাদের মধ্যে একটি হিসেবে ধরা
হয় রাসেল ভাইপার কে। আপনার মনে যদি রাসেল ভাইপার কি ডিম পাড়ে নাকি বাচ্চা দেয়
সেই সম্পর্কে প্রশ্ন এসে তাকে তাহলে আপনি সঠিক জায়গাতেই ক্লিক করেছেন।
আরো পড়ুনঃ
গর্ভাবস্থায় সফেদা খাওয়ার উপকারিতা
রাসেল ভাইপার অ্যানিমেলিয়া রাজ্যের।কর্ডাটা পর্বের Viperidae পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। বিখ্যাত স্কটিশ বিজ্ঞানী পেট্রিক রাসেলের নামকরণ অনুসারে এই সাপের
নামকরণ করা হয়েছে রাসেল ভাইপার(বৈজ্ঞানিক নাম: Daboia russelii)। রাসেল ভাইপার
দেখতে একটু মোটাসোটা হয়। রাসেল ভাইপারের দেহের চেয়ে লেজের দিকের অংশ অনেকটা বেশি
সরু হয়।
সাধারণত এদের দেহ হালকা হ্লুদাভ বা বাদামী বর্ণের হয়ে থাকে। সাধারণত রাসেল
ভাইপারের মাথা চ্যাপ্টা ও ত্রিভুজের মতো দেখতে এবং ঘাট থেকে বিচ্ছিন্ন।আর থুতনি
নিচের দিক থেকে একটু চাপা বা ভোতা থাকে এবং সমস্ত দেহের চাঁদের মত দাগ থাকে যা
দেখে অন্য সাপদের থেকে এটাকে আলাদা করা যায়।
রাসেল ভাইপারের মাথার উপর V আকৃতির একটি চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়। নিচের দিকে ধীরে
ধীরে আমরা জানবো যে রাসেল ভাইপার কি ডিম পাড়ে নাকি বাচ্চা দেয় সেই সম্পর্কে।
রাসেল ভাইপার কত বড় হয়?
রাসেল ভাইপার কি ডিম পাড়ে নাকি বাচ্চা দেয়? এটি জানার আগে চলুন জেনে নেই রাসেল
ভাইপার কত বড় হয় সেই সম্পর্কে।একটি প্রাপ্তবয়স্ক রাসেল ভাইয়ের সাধারণত ১
মিটার লম্বা হয়। তবে কিছু কিছু সাপের ক্ষেত্রে দেখা গেছে সেগুলো এক মিটারের বেশি
লম্বা হয়।
এখন অব্দি পাওয়া সবচেয়ে বড় রাসেল ভাইপারের দৈর্ঘ্য ১.৮ মিটার। রাসেল ভাইপার
সাধারণত লেজ সহ ১৬০ থেকে ১৬৬ সেমি অবধি বড় হতে পারে তবে এশিয়া অঞ্চলের দিকে এবং
ভারতীয় উপমহাদেশের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় রাসেল ভাইপার সাধারণত ১১৫
সেন্টিমিটার থেকে ১২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্ভা হয়ে থাকে।
তবে দ্বীপ অঞ্চলের দিকে রাসেল ভাইবার তুলনামূলক অনেক ছোট সাইজের হয়। ১৯৩৭ সালের
একটি সমীক্ষা অনুযায়ী- রাসেল ভাইপারের মোট দৈর্ঘ্য- ১.২৮-১.৩০ মিটার।লেজের
দৈর্ঘ্য - ৮২৫-৮৩০ মি.মি।লেজের ঘের- ১৪০-১৫০ মি.মি।মাথার প্রস্থ - ৫০ মি.মি।মাথার
দৈর্ঘ্য - ৫১ মি.মি। (পরিবেশ অঞ্চল ও খাদ্য অভ্যাস এর উপর নির্ভর করে পরিমাণটা
কিছু কমও বেশি হতে পারে)
একটি প্রাপ্তবয়স্ক রাসেল ভাইপার গড়ে সাধারণত ছয় থেকে সাত কেজি ওজন হতে পারে ।
(এই ওজনটি সাপের বয়স সাপের আকার এবং সাপের খাদ্য অভ্যাস এর উপর নির্ভর করে)।
একটু পরে রাসেল ভাইপার কি ডিম পাড়ে নাকি বাচ্চা দেয় আমরা তা জানবো নিচের আলোচনা
থেকে।
রাসেল ভাইপার আসলে কতটা বিষধর?
রাসেল ভাইপার কি ডিম পাড়ে নাকি বাচ্চা দেয় এটি জানার আগে রাসেল ভাইপার সাপ আসলে
কতটা বিষধর সে সম্পর্কে আমাদের জেনে নেওয়া উচিত।রাসেল ভাইপারের বিষ দাঁত
solenoglyphous অর্থাৎ এই সাপ হা করলে তা তীক্ষ্ণ হয়ে দেখা যায় কিন্তু আবার মুখ
বন্ধ করলে মুখের সাথে সমান্তরাল ভাবে মুখের কাছে আটকে থেকে যায় ।
একটি পূর্ণবয়স্ক রাসেল ভাইপারের শরিরের অভ্যন্তরীণ ১৩০ থেকে ২৫০ মিলিগ্রাম
পর্যন্ত বিষ পাওয়া গেছে। তবে জন্মের পরে শিশুর রাসেল ভাইপার বা চন্দ্রবোড়ার
দেহে ৮ থেকে ৮০ মিঃ গ্রাম পর্যন্ত বিষ শনাক্ত করা হয়েছে,শিশু সাপের ক্ষেত্রে গড়
বিষ ৪৫ গ্রাম হিসাব করা হয় ।
রাসেল ভাইপারের বিষে সাধারণত হিমোটক্সিন থাকে। রাসেল ভাইপার কামড় দিলে
নিম্নলিখিত মারাত্মক সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে
রক্তচাপ কমে যাওয়াঃ প্রথমত মানুষ সাপের কামড় বা দংশনের শিকার হওয়ার পরে
মানুষ ভীতসংকিত হয় এর ফলে মানুষের হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসে এবং অসার হয়ে যায়
এতে করে রক্তচাপ কমে যায়
আরো পড়ুনঃ
বিটরুট দিয়ে রূপচর্চা
রক্ত জমাট বাধাঃ হিমোটোক্সিক বিষের ফলে রক্ত জমাট বেধে যায় শরীরের সমস্ত
অংশে রক্ত চলাচল করতে পারেনা বিধায় সেই অংশ প্যারালাইজড হয়ে যায় সেক্ষেত্রে
সাপ কামড় দেওয়ার সাথে সাথেই সেই কামড় দেওয়া জায়গায় খুব ভালোভাবে প্রচুর
পরিমাণে পানি দিয়ে ধৌত করতে হবে।
অঙ্গ বিকাল হওয়া বা কেটে ফেলাঃ রাসেল ভাইপার এর কামড়ে দেহের অভ্যন্তরীণ
যেমন কিডনি ফুসফুস ইত্যাদি বিকল হয়ে পড়ে এবং গ্যাংগ্রিনের এর মত গুরুতর
অবস্থায় সৃষ্টি হলে সে অংশটুকু কেটে বাদ দেওয়া লাগতে পারে । এই বিষ বেশিরভাগ
সময় কিডনিতে আঘাত করে এবং কিডনি কে বিকল করে দেয়। বিশেষ করে দেহের অভ্যন্তরীণ
অনেক জায়গায় রক্তক্ষরণ শুরু হয়।
এইসব অত্যন্ত বিষাক্ত হওয়ায় এই সাপের প্রজনন মোটামুটি বেশি। একটু পরে আমরা
জানবো রাসেল ভাইপার কি ডিম পারে নাকি বাচ্চা দেয় সেটি সম্পর্কে।
রাসেল ভাইপারের কামড়ের লক্ষণঃ
রাসেল ভাইপার কামড় দিয়েছে নাকি অন্য কোন সাপ কামড় দিয়েছে সেটি জানা অত্যন্ত
জরুরী। রাসেল ভাইপার কি ডিম পাড়ে নাকি বাচ্চা দেয় সেটি আমরা একটু পরে জানলেও
এখন জানবো রাসেল ভাইপারের কামড়ের লক্ষণ সমূহ।
রাসেল ভাইপারের দাঁতের সাইজ অনেক বড় হওয়ায় এবং বিষের পরিমাণ অনেক বেশি হওয়ায়
রাসেল ভাইপারের বিষ খুব সহজে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। এবং এই বিষ প্রবেশ করার
১০০ মিনিটের মধ্যে কামড়ে আক্রান্ত রোগের দেহে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পায়।
এ লক্ষণ গুলো নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো
ব্যথা অনুভূত হওয়াঃ রাসেল ভাইপার কাউকে কামড়ানোর সাথে সাথেই তার সেই
জায়গাটি অত্যন্ত ব্যাথা ব্যথা হওয়া শুরু করে। এবং আক্রান্ত স্থানটি অনেক ফুলে
যায় এবং কিছু সময় পর পর একটি একটি করে অঙ্গ ফলা শুরু করে। এভাবে প্রায় সমস্ত
দেহে ফুলে যায়
চামড়ার রং পরিবর্তন হয়ে যাওয়াঃ রাসেল ভাইপার কামড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই
আক্রান্ত স্থানের চামড়ার রং পরিবর্তন হয়ে যায় এবং প্রচুর পরিমাণে রক্তপাত শুরু
হয় । এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই সেটি কালচে রং ধারণ করে।
বমি বমি ভাব ও ক্ষুধা মন্দাঃ বিষ শরীরের প্রবেশের পর কোন কিছু খেতে ইচ্ছা
না করা এবং তার পেটে ব্যথা হওয়া এবং বমি বমি ভাব হওয়া।
অজ্ঞান হয়ে যাওয়াঃ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া রোগের ক্ষেত্রে সাধারণত প্রথমে
শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এই শ্বাসকষ্ট মারাত্মক আকার ধারণ করলে সেই মুহূর্তে রোগী
অজ্ঞান হয়ে যায়।
এখন আমি আপনাকে জানালাম রাসেল ভাইপার কামড়ের লক্ষণ সমূহ একটু পরে আমরা জানবো
রাসেল ভাইপার কি ডিম পাড়ে নাকি বাচ্চা দেয় সে সম্পর্কে।
রাসেল ভাইপারের অ্যান্টিভেনাম কি বাংলাদেশে আছে?
রাসেল ভাইপারের অ্যান্টি ভেনোম, ওষুধ কিংবা টিকা যেটাই বলি না কেন সেটি বাংলাদেশে
আছে কিনা অনেকেই জানতে চান। আপনারা আরো জানতে চান রাসেল ভাইপার কি ডিম পাড়ে নাকি
বাচ্চা দেয় সে সম্পর্কে। এখন আমি আপনাকে জানাবো রাসেল ভাইপার এনটিভি নাম কি
বাংলাদেশে আছে? সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
রাসেল ভাইপার সাপটি বাংলাদেশ থেকে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছিল। তবে এখন এই সাপটিকে
নিয়ে বিশদ আলোচনা হচ্ছে। কারণ বর্তমানে সাতটি পদ্মার অববাহিকা ধরে ভারত থেকে
বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে প্রবেশ করছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের রাজশাহী
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফরিদপুর মানিকগঞ্জ চাঁদপুর ইত্যাদিতে এর আনাগোনা একটু বেশি।
চন্দ্রবোড়া বা রাসেল ভাইপার বাংলাদেশে বিপন্ন এক প্রজাতির হিসেবে ২০১৫ সাল অব্দি
বর্ণনা করা হতো । কিন্তু ২০২৪ সালে এসে রাসেল ভাইপার আবার প্রকৃতিতে ফিরে এসেছে।
রাসেল ভাইপারের বাংলাদেশে রয়েছে।
বাংলাদেশে বিশেষ করে রয়েল বেঙ্গল এন্টিভেনোম টি দেওয়া হয়। যা সঠিকভাবে
প্রয়োগের ফলে শুধু রাসেল ভাইপার নয় অন্যান্য বিষধর সাপের বিষ থেকেও সুস্থ হয়ে
ওঠা যায়। আপনাকে আরেকটু ধৈর্য ধরতে হবে রাসেল ভাইপার কি ডিম দেয় নাকি বাচ্চা
দেয় সে সম্পর্কে জানার জন্য।
বাংলাদেশের কোথায় রাসেল ভাইপার সাপের এন্টিভেনাম পাওয়া যায় এবং দাম কত?
এই সাপের এন্টিভেনামটি সাধারনত সরকারি হাসপাতাল যেমন ঢাকা মেডকেল হাসপাতাল,
রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল হাসপাতাল, ইত্যাদিতে পাওয়া যায়।
আরো পাওয়া যায়, জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেখানে এগুলো বিনামূল্যে
প্রদান করা হয়। বেসরকারি হাসপাতাল, বেসরকারি ক্লিনিক,ফার্মেসি, স্বাস্থ্য
অধিদপ্তর ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় এটি পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ
১৫ দিনে মোটা হওয়ার উপায়
সাপের কামড়ের পর যত দ্রুত সম্ভব এই উপরে উল্লেখিত যে কোন জায়গায় যেটির দূরত্ব
বাসা থেকে কাছে হবে সেখানে যাওয়া উচিত। এবং সাধারণত জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
সরকারি হাসপাতালে এর এন্টিভেনামটি ফ্রিতে দেওয়া হয়। তবে বেসরকারি হাসপাতাল এবং
ফার্মেসিতে এটি ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে।
আমি আপনাকে জানালাম বাংলাদেশের কোথায় রাসেল ভাইবার সাপের এন্টিভেনাম পাওয়া যায়
এবং দাম কত সে সম্পর্কে। আশা করি আপনি সম্পূর্ণ বুঝতে পেরেছেন। একটু পরে আমরা
জানবো রাসেল ভাইপার কি ডিম পারে নাকি বাচ্চা দেয়?
রাসেল ভাইপার কামড় দিলে কি মানুষ বাঁচে ?
আপনারা অনেকেই রাসেল ভাইপার সম্পর্কে অনেক ভীতু । আসলে এ সাপটি এতই বিষধর যে
বেশিরভাগ মানুষের মনে প্রশ্ন রাসেল ভাইপার কামড় দিলে কি মানুষ বাঁচে নাকি মারা
যায়। একটু পরে আমরা জানব রাসেল ভাইপার কি ডিম পাড়ে নাকি বাচ্চা দেয় সে
সম্পর্কে।
রাসেল ভাইপার কামড় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উপযুক্ত চিকিৎসা বা উপযুক্ত পদ্ধতি
অবলম্বন করলে মানুষ বেঁচে যায়। রাসেল ভাইপার কামড় দেওয়া সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত
স্থানটি ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। ভালোভাবে পরিষ্কার করার পরে যত দ্রুত সম্ভব
নিকটস্থ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা মেডিকেলে যেতে হবে। সাধারণত ওঝা এবং কবিরাজ থেকে
বিরত থাকতে হবে।
গত বছর ২০২৩ সালে ৩ই জুলাই পাট খেতে নিরানি দেওয়ার সময় জাহিদুল ইসলাম নামের এক
কৃষককে রাসেল ভাইপার কামড় দেয় সে তাৎক্ষণিক সাপটিকে মেরে 250 শয্যা বিশিষ্ট
কুষ্টিয়া হাসপাতালে যায় এবং চিকিৎসা নেয়।
২০২৪ এর সেপ্টেম্বর মাস অনুযায়ী এখন অব্দি সুস্থ এবং স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে।
সাপে কামড়ানোর প্রথম ১০০ মিনিট আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
মেডিকেলের এক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বলেন “আমি ইন্টার্ন করা থেকে আজ অব্দ চারজন রোগীকে
সুস্থ করেছি যারা রাসেল ভাইপার দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন”।
তাই রাসেল ভাইপার বা যেকোনো ধরনের সাপ কামড় দিলে সময়ক্ষেপণ না করে প্রয়োজনীয়
চিকিৎসা নেওয়া উচিত। আর অপেক্ষা না একটু পরেই আমরা জানবো রাসেল ভাইপার কি ডিম
পাড়ে নাকি বাচ্চা দেয় তার বিস্তারিত বর্ণনা।
রাসেল ভাইপার কি ডিম পাড়ে নাকি বাচ্চা দেয়?
আপনারা অনেকক্ষণ থেকেই অপেক্ষা করছেন এই প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে জানার জন্য।
আপনাদেরকে এতক্ষণ অপেক্ষা করানোর জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে
রাসেল ভাইপার কি ডিম পারে নাকি বাচ্চা দেয় সে সম্পর্কে জানার আগে আপনার যেগুলো
জানা প্রয়োজন উপরে আমি সেগুলো জানিয়েছি।
আরো পড়ুনঃ
ক্যান্সার রোগ থেকে মুক্তির দোয়া
আশা করি আপনি পড়ে উপকৃত হয়েছেন। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক রাসেল
ভাইপার কি ডিম পারে নাকি বাচ্চা দেয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা।অনেকে মনে করে
থাকেন যে রাসেল ভাইপার হয়তো ডিম পারে।
কিন্তু রাসেল ভাইপার ডিম পাড়ে না এরা মাতৃগর্ভে লালন করে থাকে এবং তা একটু
বয়স্ক হলে তা জন্ম দেয়। রাসেল ভাইপার সাধারণত গ্রীষ্মকালে জনন ঘটায় এবং মেয়ে
সাপটি ভ্রুণ তার দেহের অভ্যন্তরে লালন পালন করে এবং ভ্রণ বড় হয়ে উঠলে বাচ্চা
হিসেবে প্রসব করে।
সাধারণত একটি রাসেল ভাইপার ২০ থেকে ৪০ টি অনধিক ৮০ টি অব্দি বাচ্চা দিতে পারে ।
জন্মের সময় বাচ্চাগুলো সাধারণত ২৫ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার হয় । রাসেল ভাইপার এর
বাচ্চাগুলো জীবিত জন্ম নেওয়ায় বেঁচে থাকার হার অনেক বেশি ।
আশা করি আপনার কাঙ্খিত সেই প্রশ্ন রাসেল ভাইপার কি ডিম পাড়ে নাকি বাচ্চা দেয়
সেটির উত্তর আপনি পেয়ে গেছেন।
রাসেল ভাইপারের কামড়ের হাত থেকে বাঁচার উপায়
রাসেল ভাইপার অত্যন্ত বিষাক্ত সাপ হলেও এর কামড়ের হাত থেকে বাঁচার অনেক উপায়
রয়েছে। একটু আগে আমরা জেনেছি রাসেল ভাইপার কি ডিম পাড়ে নাকি বাচ্চা দেয় সে
সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো রাসেল ভাইপারের কামড়ের হাত থেকে বাঁচার উপায় সমূহ।
রাসেল ভাইপার সাপ সাধারণত ফসলের খেতে বেশি থাকে।সেক্ষেত্রে কৃষক দের অনেক বেশি
সচেতন থাকতে হবে। বাড়ির আশেপাশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। রাসেল ভাই পাট
দেখলে আতঙ্কিত হওয়া যাবে না এবং অযথা ছোটাছুটি করা যাবে না শান্ত থেকে সেখান
থেকে সরে যেতে হবে।
আরো পড়ুনঃ
ছেলেদের মোটা হওয়ার ব্যায়াম
কৃষকরা জমিতে কাজ করার সময় রক্ত প্যান্ট বা বুট জুতা ব্যাবহার করতে হবে। এই সাপ
সাধারণত মানুষকে নিজে থেকে এগিয়ে এসে কামড়ায় না। তাই এই সাপ দেখে বিচলিত বা
ভয় পাবার কোন কারণ নেই আশা করি আমি আপনাকে বুঝাইতে পেরেছি।তবে রাসেল ভাইপার
সাপের কামড়ের থেকে বাঁচার জন্য আমাদেরকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।
শেষ কথা
পৃথিবীতে যত বিষধর সাপ রয়েছে তাদের মধ্যে রাসেল ভাইপার অন্যতম তবে এতে ভয় পাবার
কোন কারণ নেই। অনেকেই ভেবে থাকেন রাসেল ভাইপার কামড়ালে মনে হয় মৃত্যু অনিবার্য।
তাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল সঠিক পরামর্শ পেলে এবং সঠিক চিকিৎসা করা হলে রোগী বেঁচে
যাবে।
তবে যেহেতু হায়াত আল্লাহর হাতে আমরা শুধুমাত্র পরামর্শ কিংবা চেষ্টা করতে পারি।
আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়ে আপনার ভালো লেগেছে। যদি এই পোস্টটি পড়ে ভালো লাগে
তাহলে আপনার বন্ধুদের শেয়ার করে জানিয়ে দিন যেন তারাও সতর্ক থাকতে পারে।
এছাড়াও এমন তথ্যবহুল পোস্ট পেতে নিয়মিত ওয়েবসাইটটি ভিজিট করার অনুরোধ রইলো।
ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url