দাউদের সবচেয়ে ভালো মলম কোনটি সেটি জানুন
মানবদেহের অনেক জটিল রোগের মত দাউদ ও একটি কষ্টদায়ক রোগ। এই রোগের ফলে রোগী অনেক
কষ্ট ভোগ করেন। আজকের এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন দাউদের স্থায়ী
চিকিৎসা এবং দাউদের সবচেয়ে ভালো মলম সম্পর্কে।
দাউদ যদিও একটি কষ্টদায়ক রোগ কিন্তু মরণব্যাধি নয়। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে খুব
অল্প সময়ে এই রোগটি দূর করা সম্ভব। আপনি যদি দাউদে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে
আর্টিকেলটি আপনার জন্যই।
ভূমিকা
দাউদ বা দাদ রোগ হল একটি চর্মরোগ। এই রোগটি সাধারণত ছত্রাকের আক্রমণের কারণে হয়ে
থাকে। বিশেষ করে গরমকালে এ রোগটি বেশি হয় তবে এখন শীতকালেও এ রোগ টি দেখা
দিচ্ছে। বিশেষ করে যখন আপনি আদ্র কাপড় পড়বেন বা আপনি কোন ঘর মুক্ত কাপড় পড়া
পড়বেন তখন এ রোগের সংক্রমণটা বেশি ঘটে থাকবে।
এ দাউদ উন্নত ত্বকে হয় এবং গোলাকার বা বৃত্তাকার দাগ হয়ে ওঠে যা বাঙ্গালীদের
ভাষায় বলা হয় চাকা চাকা হয়ে উঠেছে। এটি ত্বকে খোচাপড়ায় চুলকানি এবং
জ্বালাপোড়ার ও আবির্ভাব ঘটাতে পারে। দাউদ বা দাদ হলে অত্যাধিক পরিমাণে চুলকানোর
কারণে এটি আপনার দৈনিন্দন জীবনে ব্যাঘাত ধরাতে পারে এবং আপনি জনসম্মুখে যেতে
লজ্জা বোধ করেন।
চলনে আটকে গেলে আমি আপনাকে জানানোর চেষ্টা করব দাউদের স্থায়ী চিকিৎসা ও দাউদের
সবচেয়ে ভালো মলম সম্পর্কে বিস্তারিত।
দাউদের স্থায়ী চিকিৎসা
দাউদ বা দাঁত একটি সংক্রামক রোগ। এর জন্য এটির জন্য কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতে
হবে এবং ধৈর্য ধরে চিকিৎসা করতে হবে কারণ এটি থেকে সুস্থ হতে অনেক বেশি সময়
লাগতে পারে। চলুন আমি আপনাকে দাউদের স্থায়ী চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাই -
চিকিৎসার পূর্বে আপনাকে সর্বপ্রথম জানতে হবে এটা কি আসলে দাউদ কিনা দাউদ
শনাক্তকরণের জন্য কয়েকটি বিষের চিহ্ন রয়েছে যা দেখে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার
একটি দাউদ। দাউদের প্রধান ও অন্যতম সনাক্তকরণের চিহ্ন হলো আপনার ত্বকের চারপাশে
গোল হয়ে লালবাবা দামি বা গোলাপি কালারের দাগ দেখা যাবে
এবং সেই দাগের অভ্যন্তরে বা দাগের মাঝখানে ফাঁকা থাকবে। আক্রান্ত স্থানে প্রচুর
পরিমাণে চুলকানি হবে যা আপনার সূর্যসীমার বাইরে চলে যেতে পারে কিন্তু যখনই আপনি
বেশি চুলকাবেন তখনই চুলকানি আরো বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
আরো পড়ুনঃ কাঁচা কলার উপকারিতা
এর জন্য দাউদ হলে সেই জায়গায় যত পারা যায় তত কম চুলকানো উচিত, কারণ আমি আপনাকে
প্রথমে জানিয়েছি এটি একটি সংক্রামক রোগ তো যদি এটি আপনার হাতে লেগে থাকে এবং হাত
যদি আপনি পরিষ্কার না করে আপনার শরীরের অন্য কোন জায়গায় টাচ করেন তাহলে অবশ্যই
সে জায়গায় সংক্রামক হিসেবে দাঁত বা দাউদ বের হবে।
থেকে থেকে কিছু কিছু দাগ আক্রান্ত জায়গা বা ত্বক ফেটে যায়। আবার কিছু ক্ষেত্রে
তাদের উপর শুষ্ক আঁশ ও আবরণ দেখতে পাওয়া যায়। দাদের কিছু স্থায়ী চিকিৎসা
পদ্ধতি রয়েছে যেগুলা পালন করলে আপনি অনেকটাই উপকার পেতে পারেন -
দাঁতের জন্য সাধারণত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ মলম সাজেস্ট করে থাকেন যেগুলো এন্টি
ফাংগাল ক্রিম হিসেবে ব্যবহৃত হয় আমাদের বাংলাদেশ।আবার কিছু কিছু বিশেষজ্ঞ
ডাক্তারগণ তাদের প্রকৃতি বা তাদের অবস্থান অনুযায়ী কয়েকটি অ্যান্টিবায়োটিক
ওষুধ প্রদান করে থাকেন।
যেগুলো ডাক্তারের পরামর্শই ঠিকমতো খাওয়া উচিত। দাউদ থেকে বাঁচার সবচেয়ে বড় ও
উত্তম উপায় হল সব সময় আপনার পোশাক পরিস্কার ও পরিচ্ছন্নতা রাখা। কারণ দাঁত
ছড়ানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো পোশাক এর জন্য আপনাকে আপনার তোয়ালে, আপনার
পোশাক ইত্যাদি শুষ্ক রাখতে হবে
এবং আপনি গোসল করার পরে আপনার পোশাক পরিধান করার পূর্ব মুহূর্তে আপনার শরীরকে
সুন্দর করে শুকানো উচিত। আর আপনার পোশাক গুলো প্রতিদিন ধুয়ে দেওয়ার পরে রাত
আমার রোদে নেড়ে দেওয়া উচিত।
আরো পড়ুনঃ
প্রেমিকার মন জয় করবেন কিভাবে
আর আপনার যদি দাদ হয়ে যায় তাহলে তখন আপনি সব বিশেষ করে ঢেলেঢালা পোশাক পড়বেন,
আপনার বিছানা চাদর বালিশ কভার তোয়ালে গামছা ইত্যাদি নিয়মিত পরিষ্কার করার
চেষ্টা করবেন।
আশা করি এগুলা মানলে আপনার দাদ স্থায়ী ভাবে ভালো হয়ে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা
রয়েছে এবং ডাক্তারের পরামর্শ গুলো পালন করতে হবে। এতক্ষণ আমি আপনাকে জানাচ্ছিলাম
দাউদের স্থায়ী চিকিৎসা এখন আমি আপনাকে জানাবো দাদ হলে কি খাওয়া নিষেধ।
দাদ হলে কি খাওয়া নিষেধ
আপনার যদি দাদ হয় তাহলে কয়েকটি জিনিস খাওয়া আপনার জন্য উচিত হবে না। এখন আমি
আপনাকে সে সম্পর্কে জানাবো চলুন জানাই, দাদ কি খাওয়া নিষেধ
দাদ হলে সর্বপ্রথম আপনাকে এমন খাদ্য পরিত্যাগ করতে হবে যেগুলো সাধারণত ছত্রাক কে
বৃদ্ধি করে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কেক পেস্ট্রি, কোক, ক্যান্ডি ইত্যাদি
জাতীয় খাবার।যেসব খাবারে বেশি করে মানে কার্বোহাইড্রেট আছে সেগুলো এড়িয়ে চলতে
হবে যেমন সাদা চাল, পাস্তা, ময়দা তৈরির রুটি ইত্যাদি।
আপনার শরীর অনুযায়ী কিছু কিছু ক্ষেত্রে দুগ্ধ যার জিনিস হল এড়িয়ে চলা উচিত তার
মধ্যে হলো পনির, ঘি ইত্যাদি। অতিরিক্ত তেলাপো খাবার বর্জন করা উচিত। দাদ হলে
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি খাওয়া যাবে না তা হলো মাংস ও হাসির মাংস হাসির
ডিম ইত্যাদি।
কারণ এইগুলো এলার্জির সংক্রমণ বৃদ্ধি করে এর জন্য আপনাকে এগুলো থেকে দূরে থাকতে
হবে। তবে শুধু নিষেধাজ্ঞা হয় নাই আমি আপনাকে এখন জানাবো যে দাওয়াত তাহলে আপনি
কি খাবার খাবেন, আপনার যদি দাদ হয় তাহলে আপনাকে সর্বপ্রথম প্রচুর পরিমাণে
শাকসবজি খেতে হবে সেটি হতে পারে লাল শাক, সবুজ শাক, মিষ্টি কুমড়া, বাঁধাকপি,
ফুলকপি ইত্যাদি।
শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্যে আপনাকে অধিক পরিমাণে পানি পান করতে হবে যাতে
করে শরীর আর্দ্র না হয় এবং ছত্রাকের সংক্রমণ কম হয় ।এখন আমি আপনাকে জানাবো দাদ
রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত।
দাদ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
উন্নত চিকিৎসা আবিষ্কারের পূর্বে প্রাকৃতিকভাবে তাদের চিকিৎসা করা হতো এবং এ
প্রাকৃতিকভাবে তাদের চিকিৎসাটা অনেক কার্যকরী চলুন আমি আপনাকে এখন দাদ রোগের
ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাই -
দাদ রোগের সর্বোত্তম ঘরোয়া উপায় হলো নিম পাতা। নিমপাতা এন্টিফাঙ্গাল থাকে যার
কারনে নিমপাতা গরম পানিতে দিয়ে পানি ফুটিয়ে সে পানি ঠান্ডা করে আক্রান্ত স্থানে
লাগালে অথবা নিম পাতা বেটে আর আক্রান্ত স্থানে লাগালে বা নিম পাতা বেটে তা দিয়ে
বড়ি তৈরি করে খেলে আপনার দাদ সেরে যাবে।
দাদ রোগের আরেকটি অন্যতম প্রাকৃতিক উপায় বা প্রাকৃতিক ওষুধ হল রসুন। রসনে অনেক
ধরনের অ্যান্টি ফাংগাল থাকার কারণে রসুনকে তাদের প্রাকৃতিক ওষুধের ব্যবহার করা
হয়। কয়েকটি রসুন আপনি বেটে আপনার আক্রান্ত স্থানে ১০ থেকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে
রাখুন এবং তারপরে ধুয়ে ফেলুন।
তবে দাদে রসুন লাগানোর ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে কারণ রসুন বেশি পরিমাণে লাগালে
তা তোকে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে বা ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। এর জন্য
প্রথমের দিকে অল্প অল্প পরিমাণে রসুন বেটে লাগাতে হবে আস্তে আস্তে পরিমাণ বাড়াতে
হবে।
দাঁতের আরেকটি ওষুধ হল হলুদ। হলুদের গুঁড়ো পেস্ট করে আপনি স্থানে ১০ থেকে ১৫
মিনিট লাগিয়ে রাখুন এবং তারপরে ধুয়ে ফেলুন আশা করি এই হলুদের পেস্ট থেকে আপনি
উপকৃত হবেন। নারিকেল তেল এন্টিফাঙ্গাল হিসেবে পরিচিত।
আপনার যদি দাউদের আধিক্য খুব বেশি হয় বা দাদ যদি খুব বেশি শুষ্ক হয় তাহলে আপনি
দৈনিক দাদ এর স্থানে দুই থেকে তিনবার নারিকেল তেল ব্যবহার করবেন। এছাড়াও দাউদের
আরও প্রাকৃতিক ওষুধ রয়েছে তাদের মধ্যে হলো লেবুর রস এবং এলোভেরা জেল।
লেবুর রস একটি তুলাতে নিয়ে আক্রান্ত স্থানে ১০ থেকে ১৫ মিনিট বা এর কম বেশি সময়
লাগিয়ে রাখতে পারেন তবে সতর্কবার্তা হচ্ছে আপনি যদি তাকে জ্বালাপোড়া বা ব্যথা
অনুভব করেন তাহলে অবশ্যই দেওয়া যাবে। তাজা এলোভেরা থেকে রস বের করে আক্রান্ত
স্থানে লাগিয়ে দিন।
এতক্ষণ আমি আপনাকে দাদ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা সম্পর্কে জানাচ্ছিলাম। এখন আমি
আপনাকে জানাবো কোনটি দাউদের সবচেয়ে ভালো মলম।
দাউদের সবচেয়ে ভালো মলম
আপনি যদি জানতে চান দা ওদের সবচেয়ে ভালো মলম কোনটি? তাহলে আর্টিকেলের এই অংশটি
শুধুমাত্র আপনার জন্য -
আগে বলে রাখা ভালো যে দাউদ হলে আপনি কোন প্রকার সাবান শরীরের ইউজ করতে পারবেন না
শুধুমাত্র ডাক্তারদের পরামর্শ ব্যতীত। বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা এখন সাবান
হিসেবে ব্র্যাকটল এবং কেটো সাবান সাজেস্ট করছেন। চলুন আমি এখন আপনাকে দাওয়াতে
সবচেয়ে ভালো মলম সম্পর্কে জানাই -
দাউদের কয়েকটি ভালো মলম রয়েছে তের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো -
- কেটোকোনাজল
- ইকোনাজল
- ফাঞ্জিডাল
- টার্বিনাফিন
- মাইকোনাজল
- ক্লোট্রিমাজল
দাউদের এই সকল মলম গুলো ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী যদি আপনি মানতে পারেন তাহলে
আশা করা যায় আপনি অতি শীঘ্রই দাদ রোগ থেকে সুস্থ হয়ে পারবেন। তবে অবশ্যই সতর্ক
থাকতে হবে মলম ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপনি যেন অধিক পরিমাণে মলম ব্যবহার না করে
ফেলেন কারণ অধিক পরিমাণে মলম ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের অন্য ধরনের ক্ষতি হতে
পারে এমনকি ত্বকের সেই জায়গাটি পুড়ে যেতে পারে।
শেষ কথা
এই আর্টিকেল টিতে আমি আপনাকে দাউদের স্থায়ী চিকিৎসা থেকে দাদ রোগের ঘরোয়া
চিকিৎসা এবং দাউদের সবচেয়ে ভালো মলম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানালাম। আশা করি
এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে
তাহলে আপনার বন্ধুদের শেয়ার করে জানিয়ে দিন এবং নিয়মিত এমন বিষয় সম্পর্কে
জানতে প্রতিদিন একবার হলেও ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। ধন্যবাদ
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url