কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায় - মুখ ফর্সা করার ঘরোয়া উপায়
কথায় আছে মানুষ সুন্দরের পূজারী। সৌন্দর্যকে সবাই পছন্দ করে। সবাই চাই নিজের
শরীরের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে নিজেকে যেন সুন্দর দেখায়। এজন্য আপনার উচিত কালো থেকে
ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায় এবং মুখ ফর্সা করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত
জানা।
আপনারা অনেকেই বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন পণ্য কিনে ব্যবহার করে থাকেন। তবে বাজারে
বিক্রিত বেশিরভাগ পণ্যের মধ্যে রয়েছে রাসায়নিক উপাদান যা ত্বকের দীর্ঘমেয়াদি
ক্ষতি করে।
ভূমিকা
পৃথিবীর সকল মানুষ সুন্দর ও উজ্জ্বল হতে চায়। সে ধনী হোক বা গরীব । সকলেই চায়
যে তার চেহারা যেন সুন্দর ও উজ্জ্বল হয়। এর জন্যই আপনারা জানতে চান কালো থেকে
ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। এই আর্টিকেলটি পড়লে আশা করি আপনি এই
ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
অনেকেই ফর্সা হওয়ার জন্য অনেক ধরনের ক্রিম ব্যবহার করে থাকেন কিন্তু এটাতে অনেক
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকতে পারে তাই আমি আপনাকে মুখ ফর্সা করার ঘরোয়া উপায়
সম্পর্কে কিছু জানাবো এই আর্টিকেলটিতে।
ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করার উপায়
আমাদের ত্বক এর কালার উজ্জ্বল হবে নাকি অনুজ্জ্বল হবে তা জেনেটিকালি নিয়ন্ত্রিত
হয়। তারপরেও আমরা বাইরে বের হই তখন সূর্যের রশ্মি, দৈনন্দিন জীবনযাপন, ধুলাবালি
ও পরিবেশ দূষণ ইত্যাদির কারণে আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা ও মসৃণতা হারিয়ে যায় ফলে
আমাদের দেখতে কালো লাগে।
কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানার আগে চলুন আমি আপনাকে জানিয়ে
দিই তক উজ্জ্বল ও মসৃণ করার উপায় সম্পর্কে। আমরা সকলেই চাই যেন আমাদের ত্বক
উজ্জ্বল ও মসৃণ থাকে। ত্বকের স্বাভাবিক রং ও ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে
আপনাকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
স্কিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ সাজেস্ট করে থাকেন যেন একজন ব্যক্তি সারাদিনে অন্তত আট
গ্লাস পানি পান করেন। পেটে ত্বকে উজ্জ্বল ও হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে শরীরের বিষাক্ত তরল পদার্থ গুলো ঘাম অথবা মূত্রের
সাথে বের হয়ে শরীরকে সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখে।
শরীরের উজ্জ্বলতা হারানোর আরেকটি কারণ হলো ত্বকের কোষের মৃত্যু। মৃত কোষ কে জীবিত
করার সবচেয়ে ভালো ঘরোয়া উপায় হল চিনি দিয়ে স্ক্রাব তৈরি করা। চলুন আপনাকে
জানাই কিভাবে চিনিতে স্ক্রাব তৈরি করবেন।
- উপকরণঃ এক টেবিল চামচ চিনি, হাফ চামচ রস ও এক টেবিল চামচ মধু নিবেন।
- প্রস্তুতিঃ প্রথমে চিনি ও মধু একসাথে মিক্স করার পরে প্রয়োজন মতো লেবুর রস তাতে মিশাতে হবে। এভাবে ৫ মিনিট রেখে দিন
- ব্যাবহারঃ স্ক্রাব টি প্রস্তুত হয়ে যাওয়ার পরে শরীরের অমসৃণ অংশে ভালোভাবে লাগিয়ে তা দুই থেকে পাঁচ মিনিট ঘষতে থাকুন। অতিরিক্ত জোরে ঘুষবেন না হালকা করে ঘষুণ অন্যথায় ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। এরপরে খুব সুন্দর করে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই স্ক্রাবটি সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করলে দেখবেন আপনার শরীরের উজ্জ্বলতা ও মসৃণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এতক্ষন আপনি জানলেন ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করার উপায় একটু পরে আমি আপনাকে জানাবো
কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায়।
কি খেলে গায়ের রং ফর্সা হয়
আমরা সকলেই জানি যে আমাদের গায়ের রং সাধারণত জেনেটিকালি নিয়ন্ত্রণ হয়। তারপরেও
কিছু কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো আমাদের শরীরের রং কে অনেক উজ্জ্বল এবং ফর্সা করতে
পারে চলুন আমি আপনাকে সেই খাবার সম্পর্কে জানাই।
গায়ের রং ফর্সা করার জন্য আপনি কিছু ফল খেতে পারেন।সাধারণত ত্বক ফর্সা করে এবং
ত্বকের দাগ কমায় যে সকল ফল সেগুলো হল পেয়ারা, স্ট্রবেরি, লেবু, কমলা, আমলকি
ইত্যাদি । এই ফল গুলোতে অত্যাধিক পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। ত্বকের আদ্রতা ও
উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে কিছু খাবার সাহায্য করে ।
সেগুলো হলো বাদাম,পালং শাক, সূর্যমুখীর বীজ ইত্যাদি। যেগুলোতে অনেক পরিমাণে
ভিটামিন ই রয়েছে যা ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। অনেক সবুজ শাকসবজি
রয়েছে যেগুলো আমাদের ত্বককে ফর্সা রাখতে বা ফর্সা করতে সাহায্য করে,
আরো পড়ুনঃ
মেডিটেশন কিভাবে চেহারা সুন্দর করে
এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পালং শাক, ফুলকপি,বাঁধাকপি ও অন্যান্য সবুজ শাক
এগুলো আমাদের ত্বকে ফর্সা করতে সাহায্য করে। সি ফুড ও ডিম আমাদের ত্বক কে ফর্সা
সাহায্য করে। কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে জানতে আপনাকে আরেকটু
ধৈর্য ধরে আর্টিকেল টি পড়তে হবে।
কোন ভিটামিন খেলে চেহারা সুন্দর হয়
চেহারা সুন্দর ও চেহারার উজ্জ্বলতা বাড়াতে কিছু ভিটামিন আমাদেরকে সাহায্য করে।
এই ভিটামিন গুলো সম্পর্কে আমি এখন আপনাকে বিস্তারিত জানাবো।
- ভিটামিন বি কমপ্লেক্সঃ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স সাধারণত ত্বকের আদ্রতা ও মানুষকে নরম করতে সাহায্য করে। এটি ত্বককে রুক্ষতার হাত থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের উৎস হলো দূধ ডিম মাছ মাংস ইত্যাদি।
- ভিটামিন সিঃ ভিটামিন সি আমাদের ত্বক কে টাইট ও মসৃণ করে রাখবে। এটি দাগ কমায় এবং ফ্রী রেডিক্যাল এর থেকে আমাদের ত্বককে রক্ষা করে। ভিটামিন সি এর উৎস হলো আমলকি লেবু কমলা আপেল ইত্যাদি।
- ভিটামিন এঃ গাজর,মিষ্টি আলু ইত্যাদি জাতীয় সবজিতে রয়েছে ভিটামিন এ। এ ভিটামিন সাধারণত শরীরের ত্বককে সাহায্য করে।
- ভিটামিন ইঃ ভিটামিন ই ত্বককে রুক্ষতা ও ত্বক ফাটা থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন ই ত্বকের এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। ভিটামিন ই এর উৎস হল বাদাম পালং শাক সূর্যমুখী বীজ ইত্যাদি।
- ভিটামিন ডিঃ ভিটামিন ডি ত্বকের নতুন কোষ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমাদের ত্বকে যদি কোন কারণে ব্যথা হয়ে থাকে তবে সেই ব্যথার প্রদাহকে কমাতে ভিটামিন ডি সাহায্য করে। সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। ভিটামিন ডি এর আরো কিছু উৎস হলো মাছের ডিম ডিমের কুসুম মাছের তেল ইত্যাদি।
এতক্ষণ আমি আপনাকে জানালাম কি খেলে মুখ ফর্সা হয়। কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া
উপায় সম্পর্কে জানতে আপনাকে আর একটু সময় ধৈর্য ধারণ করে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি
মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
ত্বক লাবণ্যময় করার উপায়
কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগে আমি আপনাকে
আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস সম্পর্কে জানাচ্ছি ,তার মধ্যে অন্যতম হলো ত্বক
লাবণ্যময় করার উপায়। আমরা সকলেই চাই যেন আমাদের ত্বক দেখতে লাবণ্যময় হয়।
এর জন্য আপনাকে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস
অর্থাৎ ফলমূল শাকসবজি ইত্যাদি ঠিক নিয়মে গ্রহণ করতে হবে। প্রতিদিন ৩০ মিনিট হলেও
আপনাকে এক্সারসাইজ করতে হবে যাতে করে ত্বকের এত টক্সিন গুলো বের হয়ে যায়।
আরো পড়ুনঃ
বুয়েটে চান্স পাওয়ার টিপস
সব সময় ত্বক সুন্দর করে ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে রাখতে হবে। বাইরে বের হলে
সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে যাতে করে সূর্যের ইউভি রাশি আপনার শরীরের বা ত্বকের
কোন প্রকার ক্ষতি করতে না পারে।
মানসিক চাপ কমানোর মাধ্যমে ও পর্যাপ্ত ঘুমের মাধ্যমে আপনি আপনার ত্বকে লাবণ্য ধরে
রাখতে পারবেন। প্রাকৃতিক তেল যেমন আলমন্ড বা নারিকেল তেল ব্যবহার করলে আপনার ত্বক
উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং লাবণ্যময় হবে।
মুখ ফর্সা করার ঘরোয়া উপায়
কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কের বিস্তারিত জানার আগে মুখ ফর্সা
করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আমি আপনাকে জানাবো। আমরা সকলেই চাই যেন আমাদের মুখ
দেখতে যেন সুন্দর দেখায়। চলুন আমি আপনাকে জানাই কিভাবে মুখ ফর্সা করা যাবে
ঘরোয়া উপায়ে।
- বেসন ও হলুদঃ দুই টেবিল চামচ বেসন ও এক চামচ হলুদ পর্যাপ্ত পানি দিয়ে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। পেস্ট তৈরি হয়ে গেলে সুন্দর মত মুখে লাগিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন তারপরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন দেখবেন আপনার মুখ আগের থেকে উজ্জ্বল হয়েছে।
- শসার রস ও টমেটোর রসঃ শসা রস মুখে লাগালে ত্বকে শীতল অনুভব হয় এবং লাগানোর ১৫ মিনিট পর সুন্দর মত মুখ ধুয়ে নিলে ত্বক উজ্জ্বল হয়। টমেটোর রস সাধারণত মুখের দাগ দূর করতে সাহায্য করে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেললে মুখ অনেকটা ফর্সা দেখায়।
- জলপাইয়ের তেল বা অলিভ অয়েলঃ অলিভ অয়েল মুখে লাগালে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং মুখের দাগ দূর হয়। আপনি রাতে ঘুমানোর আগে অলিভ অয়েল মুখে লাগিয়ে শুয়ে পড়ুন এবং সকালে উঠে সুন্দর মত মুখ ধুয়ে ফেলুন।
এতক্ষণ আমি আপনাকে জানাচ্ছিলাম মুখ ফর্সা করা সম্পর্কে এখন আমি আপনাকে জানাবো
কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায়
আমরা মানুষ সাধারণত সুন্দরের পূজারী। সকলেই সুন্দরকে ভালোবাসে ও পছন্দ করে। চলুন
আমি আপনাকে জানাই কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে
- কোকোনাট ওয়েল ও চিনিঃ ১ টেবিল চামচ কোকোনাট ওয়েল ও এক টেবিল চামচ চিনি দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে মুখে আধা ঘন্টা লাগিয়ে রাখুন তারপরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- মসুরের ডাল এর প্যাকঃ মসুরের ডাল করে টেবিল চামচ নিন ও আধা চামচ নিয়ে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে আধা ঘন্টা লাগিয়ে রাখুন তারপরে পরিষ্কার পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- মধু ও লেবুর মিশ্রণঃ এক টেবিল চামচ লেবু ও এক টেবিল চামচ মধু মুখে লাগান এবং ১৫ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন।
আরো পড়ুনঃ
ব্যালন ডি অরের পর্দার পেছনের গল্প
- অ্যালোভেরা জেলঃ অ্যালোভেরা গাছের পাতা কাটুন এবং মাঝখান থেকে সুন্দর করে জেলগুলো বের করে নিন। তারপরে এটি মুখে লাগান এবং ২০ থেকে ২৫ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন।
- দই এবং মধুর প্যাকঃ দুই টেবিল চামচ দই এবং এক টেবিল চামচ মধু টেস্ট করে মুখে লাগানো এবং 20 মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন আপনার মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে।
শেষ কথা
আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমি আলোচনা করেছি কালো থেকে ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া উপায়
সম্পর্কে বিস্তারিত , আশা করি উপরের আলোচনা থেকে আপনি বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত জানতে
পেরেছেন । এগুলো নিয়মমাফিক মেনে চললে অবশ্যই আপনি আপনার ত্বককে কালো থেকে ফর্সা
করতে পারবেন।
তবে ত্বক যেহেতু একটি সেনসিটিভ জায়গা সেজন্য আপনার উচিত হবে ডাক্তারের শরণাপন্ন
হওয়া। এবং নিজের ত্বককে যাচাই-বাছাই করে তারপরে বিভিন্ন জিনিস মুখে ব্যবহার করা।
এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার ভালো লাগে তাহলে আপনার প্রিয় মানুষকে শেয়ার করে
তাকেও জানার সুযোগ করে দিন। এবং নিয়মিত এরকম প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পর্কে জানতে
নিয়মিত ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url